১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে আমরা সাধারণত আমাদের জাতীয় ইতিহাসের মহান গৌরব হিসেবে দেখি। তবে গভীর পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধের পেছনে ভারতের অপকৌশল এবং ষড়যন্ত্রের ছায়া রয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা, যিনি ছিলেন ভারতের দালাল তিনি ভারতের স্বার্থ হাসিলের জন্য কাজ করেছেন। তাঁর ‘ছয় দফা’ আন্দোলন, যা আমাদের কাছে স্বাধীনতার দাবি মনে হয়, প্রকৃতপক্ষে ছিল ভারতের পরিকল্পিত কূটনৈতিক চালাকি যার মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকে বিভক্ত করা হয়েছিল। পাকিস্তান বিভক্ত করার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল। শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ভারতীয় কৌশলের সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। তিনি ভারতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিলেন। স্বাধীনতার নামে চলা এই আন্দোলনে প্রকৃত দেশের স্বার্থ বিবেচনা করা হয়নি। বরং পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করে ভারতীয় প্রভাব বিস্তার নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য ছিল।
Category: Democracy
জাতীয় পতাকা ও সংগীত কি সত্যিই বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে?
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে যে “আমার সোনার বাংলা” গানটি রাখা হয়েছে, সেটি প্রকৃতপক্ষে পশ্চিমবঙ্গের জন্য লেখা হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই গানটি লিখেছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের পূর্ব বঙ্গ তথা আজকের পশ্চিমবঙ্গের মাটির প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ হিসেবে, যা আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বাস্তবতা ও অনুভূতির সঙ্গে কোনোমতেই মেলেনা। কিন্তু আমরা কেন এতকাল এই গানকে বাংলাদেশী জাতীয় সংগীত হিসেবে মেনে নিয়েছি? এটা কি আমাদের নিজের জাতির সংস্কৃতি, ইতিহাস ও পরিচয়ের সত্যিকার প্রতীক? না, বরং এটা একটি নিছক উপনিবেশবাদী ও ভারতীয় সাংস্কৃতিক প্রভাবের অবশিষ্টাংশ। আমরা এই বিদেশি সাংস্কৃতিক ছাপমুক্ত হতে পারিনি, বরং স্বাধীনতার পরেও সেই দখলদারত্বের ছায়ায় পড়ে আছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সংগীত বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।
এখন প্রশ্ন হলো- আমাদের জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীত কি সত্যিই আমাদের স্বাধীনতার প্রকৃত প্রতীক? নাকি এগুলো এক ধরনের রাজনৈতিক ও ভারতের আধিপত্যের প্রতীক, যা আমাদের জাতির প্রকৃত পরিচয় ও ইতিহাসকে অবজ্ঞা করে? এখন আমি এই প্রশ্ন উঠানোয় অনেকের কাছে তা ‘অপমানজনক’ মনে হতে পারে, কিন্তু গণতন্ত্রের আসল চাহিদাই হলো স্বচ্ছতা, প্রশ্নবোধ এবং নিজের দেশ ও ইতিহাসের প্রতি সৎ বিচার। আমাদের জাতীয় সংগীত “আমার সোনার বাংলা” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা, যা ১৯০৫ সালের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময়ে লেখা হয়েছিল। অর্থাৎ, বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে ওঠার অনেক আগে এটি রচিত। এই সংগীতে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটির কোনো উল্লেখ নেই, বরং ‘বাংলা’ শব্দের মাধ্যমে অবিভক্ত বাংলার আবেগ প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর সময় পরও এই সংগীতই বাংলাদেশে জাতীয় সংগীত হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যেখানে আমাদের দেশের নাম ও প্রকৃত সংস্কৃতির উল্লেখ নেই। এটা কি স্বতন্ত্র জাতির সাংস্কৃতিক ও জাতীয় পরিচয় সঠিকভাবে প্রতিফলিত করে? এই প্রশ্ন খুব জরুরি।
২০১৬: হারানো শক্তি ফিরে পেতে ব্যর্থ বিএনপি
২০১৬ সালটি গত হয়েছে। অনেক ঘটনা-দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়ে অতীতের সারিতে স্থান করে নিয়েছে গত ৩১ ডিসেম্বর সূর্যাস্তের সাথে সাথে। এখন চলছে গত বছরটি নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশ। প্রত্যাশা-প্রাপ্তির ব্যালেন্স শিট মেলাতে ব্যস্ত সবাই। রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিষয় আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট, মোট কথা আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ২০১৬ সাল কী দিয়ে গেল বা কী নিয়ে গেল তারই চুলচেরা বিশ্লেষণে রত হয়েছেন অনেকে।
সিলেট নগরীর রিকাবিবাজারে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের চাদাবাজি নিয়ে সংঘর্ষ
সিলেট নগরীর রিকাবিবাজার এলাকায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল সমর্থকদের মধ্যে এক ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যেখানে মূলত চাদাবাজির অভিযোগ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রিকাবিবাজারস্থ স্টেডিয়াম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এই সহিংসতা রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং ক্ষমতার জন্য তিক্ত প্রতিযোগিতার একটি চরম উদাহরণ। ছাত্র সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত শিক্ষা, সচেতনতা এবং সমাজের উন্নতি সাধন, কিন্তু সিলেটের এই ঘটনা এটি সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থায় পরিণত করেছে। ছাত্র রাজনীতি যখন সহিংসতা, চাদাবাজি এবং অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে পরিচিত হতে শুরু করে, তখন তা দেশের ভবিষ্যৎতের জন্য একটি ভয়াবহ সংকেত হয়ে দাঁড়ায়।
অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যাকাণ্ড: জঙ্গিবাদের বিষবৃক্ষের শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে
২৩ এপ্রিল ২০১৬, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। দিনের আলোয় প্রকাশ্যে ঘাতকেরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার ধরন, সময় এবং বার্তা পরিষ্কার করে দেয়—এটি ছিল একটি সংগঠিত, পূর্বপরিকল্পিত জঙ্গি হামলা। এ হত্যাকাণ্ড কেবল একটি জীবন নিঃশেষ করে দেয়নি; এটি ছিল মুক্তচিন্তার উপর এক গুরুতর আঘাত।
এই হত্যার পর আবারো প্রশ্ন উঠে: বাংলাদেশ কি নিরাপদ? সরকারের দায়িত্ব কি কেবল শোক প্রকাশ করা, নাকি এই হত্যার শেকড় উপড়ে ফেলা?
