বাংলাদেশের রাজনীতিতে সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে যে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় বিএনপি নেতা-কর্মীরা ক্ষমতা, অর্থ ও প্রভাবের লোভে সহিংসতার পথ বেছে নিচ্ছে। মনোনয়ন না পেলে তারা শৃঙ্খলা বিপর্যয়, লুটপাট, ভাঙচুর এবং অশান্তি সৃষ্টি করে, যা শুধু তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণ করে না, বরং সাধারণ নাগরিকদের জীবনেও ভয়, অনিশ্চয়তা এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি ডেকে আনে। ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে, এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়ছে। এতে স্পষ্ট যে, বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংস্কার এবং স্বচ্ছ মনোনয়ন প্রক্রিয়ার অভাবে তৃণমূলের নেতারা নিজের হতাশা প্রকাশের জন্য সহিংসতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার এমন অবক্ষয় দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করে এবং দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকিতে ফেলে।
Tag: Bangladesh
ঢাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের মিছিল: জনগণ জবাব চায়?
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার রাস্তায় আবারও দেখা যাচ্ছে এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের পতাকা উড়ছে, স্লোগান গর্জে উঠছে, আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দাঁড়িয়ে শুধু দেখছে। প্রশ্ন একটাই এই দেশে কি আইন আছে? এই সরকার কি আদৌ নিরপেক্ষ? অন্তবর্তীকালীন সরকার, বিশেষ করে ড. ইউনুসের নেতৃত্বে আসা বর্তমান প্রশাসন জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা দেশে ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সেই গণতন্ত্রের নামে চলছে ভয়াবহ দ্বৈত নীতি। একদিকে সরকারের বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা, গ্রেপ্তার, মামলার পাহাড়; অন্যদিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে মিছিল করছে, স্লোগান দিচ্ছে, রাস্তাজুড়ে ক্ষমতার প্রদর্শন করছে অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। এটা কি তাহলে সরকারের নীরব সমর্থন? বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, যে কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারে না। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই আইন কার জন্য? সরকারের ভিন্মমতের জার্নালিস্ট, ব্লগার, সাধারন মানুষ যখন রাস্তায় নামতে চায়, তখন পুলিশি লাঠি আর গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখা যায়। অথচ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যদি মিছিল করে, তখন আইন ঘুমিয়ে যায়! এটা কি আইনশৃঙ্খলার সমতা, নাকি প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্বের নগ্ন উদাহরণ?
দুর্বল বিএনপি, শক্তিশালী জামায়াত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিদিন নতুন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে। এক সময়ের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল বিএনপি আজ এক গভীর সংকটের মধ্যে পড়েছে। তাদের সংগঠনের ভাঙন, দুর্বল নেতৃত্ব, এবং ধারাবাহিক ভুল সিদ্ধান্তের কারণে জনপ্রিয়তা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। অন্যদিকে, বিতর্কিত হলেও জামায়াতে ইসলামী কিছু জায়গায় নিজেদের সংগঠন ধরে রাখার কারণে সীমিতভাবে হলেও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করছে। বিএনপির প্রধান নেতৃত্ব এখন কার্যত লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের হাতে। দেশে না থেকেও তিনি দূর থেকে সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন। এতে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। তারেক রহমানের দুর্নীতি ও অতীতের কালো অধ্যায় জনগণের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনের ডাক দিলেও তা বাস্তবে রূপ নিতে পারেনি। পুলিশি দমন-পীড়ন অবশ্যই একটি কারণ, কিন্তু বিএনপির সংগঠনকে মজবুত করে মাঠে থাকার সক্ষমতাও নেই। বারবার আন্দোলনে ব্যর্থতা তাদের কর্মীদের হতাশ করেছে।
৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন: ছাত্ররাজনীতির পুনর্জাগরণ নাকি পুরোনো সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি?
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে গণআন্দোলন, স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রাম, সব ক্ষেত্রেই ডাকসু নেতারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে এই প্রতিষ্ঠান কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। নির্বাচনের নামে ছাত্রলীগের একচেটিয়া দখল, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও জালিয়াতির কারণে ডাকসু তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছিল। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্য দিয়ে ছাত্রসমাজের মধ্যে আবারও আলোচনার ঝড় উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে, এ নির্বাচন কি সত্যিই শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর ফিরিয়ে আনবে, নাকি এটি আরেকটি প্রহসন হয়ে যাবে?
চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ বিএনপিকে আমরা ক্ষমতায় চাইনা
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিএনপির ভূমিকা একসময় ছিল রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের অংশ হিসেবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই দলটি দুর্নীতির আখড়া ও চাঁদাবাজির সিন্ডিকেটে রূপ নিয়েছে। আজ যখন দেশের মানুষ পরিবর্তনের আশায় তাকিয়ে আছে, তখন বিএনপি আবার ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। কিন্তু জনগণের প্রশ্ন- একটি দল যাদের অতীত ঘেরা শুধুই লুটপাট, চাঁদাবাজি, হত্যা, রাজনৈতিক প্রতিশোধ, তারা কি আবারও রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিতে পারে?
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি সরকার দেশের রাজনীতি, প্রশাসন ও অর্থনীতিকে যেভাবে ধ্বংস করেছে, তা ইতিহাসে কলঙ্কময় অধ্যায় হিসেবে রয়ে যাবে। তৎকালীন সময়ে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতিবিরোধী প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ছিল টানা পাঁচ বছর বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। বিএনপির প্রভাবশালী নেতারা দলীয় পরিচয়ে সরকারি প্রকল্পে কমিশন খেতেন, আর দলীয় ক্যাডাররা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলতো। তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে বহু কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগের মামলা হয়েছিল। দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়ার দুই পুত্র তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর নাম এসেছে আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টেও।
