জাতির সঙ্গে যে নির্মম বেঈমানি চলছে, তার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবির আহমেদ। দেশের জনগণ এবং আইনপ্রণেতাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালে ওয়ারেন্ট জারি হওয়া এই ব্যক্তিকে গত দুইদিন আগে হাউস অ্যারেস্ট করা উচিত ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার কোনো সুনির্দিষ্ট খবর পাওয়া যাচ্ছে না। এই অদ্ভুত অবস্থা শুধুই জনমনের মধ্যে সন্দেহ ও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অভিযোগ রয়েছে যে, কবির আহমেদের পালিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় সরাসরি সহযোগিতা করেছে সেনাপ্রধান ওয়াকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে লে. জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম (সিজিএস), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সেলিম আজাদ (ডিএমআই), মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর (ডি/জি/এফ/আই), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌফিক (ডি/জি/এফ/আই), এবং ঢাকা আর্মি সিকিউরিটি ইউনিটের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ার জাহিদ এই প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার কথা বলা হচ্ছে।
Tag: chief of army bd
সেনাবাহিনী প্রধান ওয়াকার: দেশের গৌরব নাকি স্বৈরাচারের দোসর?
বাংলাদেশের ইতিহাসে সেনাবাহিনীর ভূমিকা বারবার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা যেখানে তাদের প্রধান দায়িত্ব, সেখানে অনেক সময় সেনাবাহিনীর কিছু ব্যক্তি সরকারের স্বৈরাচারী নীতির সহযোগী হয়ে ওঠেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে, সেনাবাহিনী প্রধান ওয়াকার কি সেই ধরনের এক স্বৈরাচারের দোসর ছিলেন?
জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ভলকার তুর্ক যখন সেনাবাহিনীকে সতর্ক করে বলেছিলেন যে, যদি তারা আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালায়, তবে তাদের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে, তখন এটি বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা ছিল। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেনাপ্রধান ওয়াকার কি তখন স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্রবিরোধী অবস্থান নিয়েছিলেন?
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, সেনাবাহিনী রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে এবং জনগণের পক্ষে থাকবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। অনেক সময় সেনাবাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্ব সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে অংশ নেয়, বিরোধী মত দমন করে এবং রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নে ভূমিকা রাখে। যদি ওয়াকার সত্যিই স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে থাকেন, তবে এটি সেনাবাহিনীর মৌলিক দায়িত্বের পরিপন্থী।
