CategoriesDemocracyHuman RightsJusticePolitics

জাতির সঙ্গে বেঈমানি: দায়ীদের বিচারের আওতায় আনুন

জাতির সঙ্গে যে নির্মম বেঈমানি চলছে, তার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবির আহমেদ। দেশের জনগণ এবং আইনপ্রণেতাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালে ওয়ারেন্ট জারি হওয়া এই ব্যক্তিকে গত দুইদিন আগে হাউস অ্যারেস্ট করা উচিত ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার কোনো সুনির্দিষ্ট খবর পাওয়া যাচ্ছে না। এই অদ্ভুত অবস্থা শুধুই জনমনের মধ্যে সন্দেহ ও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অভিযোগ রয়েছে যে, কবির আহমেদের পালিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় সরাসরি সহযোগিতা করেছে সেনাপ্রধান ওয়াকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে লে. জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম (সিজিএস), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সেলিম আজাদ (ডিএমআই), মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর (ডি/জি/এফ/আই), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌফিক (ডি/জি/এফ/আই), এবং ঢাকা আর্মি সিকিউরিটি ইউনিটের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ার জাহিদ এই প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার কথা বলা হচ্ছে।

CategoriesDemocracyHuman RightsJusticePolitics

দেশে কেন নারী নিরাপদ নয়: জবাব দাও সরকার!

বাংলাদেশের মুরাদনগরে ঘটে গেলো একটি নির্মম ধর্ষণের ঘটনা আবারো আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো—এই রাষ্ট্রে নারীর জন্য নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই। যখন একটি মেয়ে ধর্ষিত হয়, তার শরীর ছিন্নভিন্ন করে পাশবিকভাবে তাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়, তখন শুধু একটি ধর্ষক দায়ী থাকে না—দায়ী থাকে রাষ্ট্র, দায়ী থাকে সেই সরকার যারা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এই অপরাধটি শুধু একজন অপরাধীর কাজ নয়—এটি আমাদের সমাজের অব্যবস্থা, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় বেড়ে ওঠা সন্ত্রাস, এবং সেই রাষ্ট্রীয় মেশিনারির নিস্পৃহতা ও দুর্বলতার এক কালো প্রতিচ্ছবি।

একটি মেয়ে যখন ধর্ষণের শিকার হয়, তখন তার জীবন শেষ হয়ে যায়—কিন্তু রাষ্ট্র তার জন্য কী করে? শুধু ফাইল টানাটানি, মামলা গুম, আর যেনতেন তদন্ত? এই রাষ্ট্র যদি প্রতিবার নারীর সম্মানের সুরক্ষায় ব্যর্থ হয়, তবে সে রাষ্ট্রের নৈতিক ভিত্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আর নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করলে চলবে না। তাদের সাহসিকতা, নিরপেক্ষতা এবং দক্ষতা আজ পরীক্ষার মুখে। যারা এই দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায়, পুলিশের ওপর জনসাধারণের আস্থা একেবারেই ধ্বংস হয়ে যাবে। আজকে ধর্ষকেরা জানে—এই দেশে তাদের বিচার ঠিকঠাক হয়না, বা হলেও সেটা হবে দীর্ঘসূত্রতায় গলা টিপে মেরে ফেলার মতো। এ কারণেই একের পর এক ধর্ষণ ঘটে, ধর্ষণের পর হত্যা ঘটে। মুরাদনগরের ঘটনাও তার ব্যতিক্রম নয়।

CategoriesDemocracyHuman RightsJusticePolitics

ভোট ডাকাতির দায়: সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের বিচারের সময় এখন

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তি ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়েছে, এবং এর অন্যতম বড় কারণ হলো নির্বাচন ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনের নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্ব। একটি দেশের নির্বাচন কমিশন যত বেশি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী হয়—তত বেশি সেই দেশ গণতন্ত্রে রক্ষা পায়। কিন্তু বাংলাদেশের গত ১৫ বছরের বাস্তবতায় দেখা যায়, নির্বাচন কমিশন কেবল একটি গৃহপালিত প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়িযছিল, যেখানে সাবেক তিনজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনগণের বিশ্বাস ভেঙেছেন এবং নির্বাচন ব্যবস্থাকে নির্বিকার, পক্ষপাতদুষ্ট ও জনগণ-বিচ্ছিন্ন করে তুলেছিলেন।

২০১৪ সালের নির্বাচন রকিবউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই নির্বাচন বিশ্বে ‘ভোটারবিহীন নির্বাচন’ হিসেবে কুখ্যাত হয়ে আছে। ১৫৪ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন, কারণ বিরোধী দল বিএনপি এবং তাদের জোট এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। নির্বাচনকেন্দ্রগুলো ছিল ফাঁকা, সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই নির্বাচনের স্বীকৃতি দিতে দ্বিধান্বিত ছিল। এই নির্বাচন বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে একটি কৌতুকের পর্যায়ে নামিয়ে আনে, এবং প্রশ্ন উঠে রকিবউদ্দিনের নিরপেক্ষতা নিয়ে। তিনি তখন সরকারি প্রণোদনার আশায় চোখ বুজে একতরফা ভোটের আয়োজন করেন।

CategoriesDemocracyHuman RightsJusticePolitics

স্বৈরাচার হাসিনার পতন ও উগ্রবাদীদের উত্থান

শেখ হাসিনার সরকারের পতন বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে এক নতুন রঙ নিয়ে এসেছে, তবে সেই পরিবর্তনটি কী ধরনের হবে তা এখনও পরিষ্কার নয়। একদিকে, দেশের জনগণ গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সুশাসন চায়, অন্যদিকে, উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোর উত্থান বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে এক বিপজ্জনক দিকে ঠেলে দিতে পারে। হাসিনার পতনের পর, ধর্মীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোর ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টা এবং তাদের সহিংস কার্যক্রমের বিস্তার একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন উগ্র গোষ্ঠী, যারা দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনীতি ও সমাজে তাদের প্রভাব বিস্তার করতে চাচ্ছিল, তাদের এখন সুযোগ মিলেছে। তারা সরকারের পতনকে একটি তাদের সংগ্রামের শুরু হিসেবে দেখতে পারে, যার মাধ্যমে তারা মৌলবাদী শাসন কায়েম করার চেষ্টা করবে।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির ধ্বংসের সময় “আল্লাহ আকবার” স্লোগান দেয়ার ঘটনাটি এক গভীর উদ্বেগের বিষয়। “আল্লাহ্ আকবার” একটি পবিত্র ইসলামিক বাক্য, যা সাধারণত ইবাদত ও প্রশংসার জন্য ব্যবহৃত হয়। কিন্তু চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলো যখন এটিকে সহিংসতার সাথে জুড়ে দেয়, তখন তারা মূলত ইসলামকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা পাঠায়।উগ্রবাদীরা ধর্মীয় স্লোগান “আল্লাহ আকবার” দিয়ে তাদের কার্যক্রমকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে, যা একটি সাম্প্রদায়িক প্রতীক হয়ে উঠতে পারে। এই পরিস্থিতিতে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের ভিত্তিকে বিপন্ন করতে পারে, যেখানে স্বাধীনতা, মানবাধিকার, এবং মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোর শাসন প্রতিষ্ঠা করা ছিল বাংলাদেশের মূল উদ্দেশ্য।

CategoriesDemocracyHuman RightsJusticePolitics

ফ্যাসিবাদের দোসররা উপদেষ্টা পরিষদে কেন? সরকারের উদ্দেশ্য কী?

বিগত সরকার মুজিববাদকে পুঁজি করে একটি ফ্যাসিস্ট শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই জালেম স্বৈরশাসকগোষ্ঠীর পতন নিশ্চিত হয়। ফারুকী ও বশিরসহ একাধিক উপদেষ্টা সেই পতিত আওয়ামী সরকারের দোসর। সেখ বশির উদ্দীন সরাসরি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র হত্যার সঙ্গে জড়িত। তাকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা শহীদ ভাইদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি। মোস্তফা ফারুকী বিভিন্ন সময়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানা উপায়ে শেখ হাসিনা সরকারের প্রশংসা করেছেন, সমর্থন জুগিয়েছেন। এ ছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘনিষ্ঠ সাবেক তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ ফ্যাসিস্ট সরকারের একাধিক নেতার ঘনিষ্ঠ ছিলেন ফারুকী।