CategoriesDemocracyHuman RightsJusticePolitics

জাতির সঙ্গে বেঈমানি: দায়ীদের বিচারের আওতায় আনুন

জাতির সঙ্গে যে নির্মম বেঈমানি চলছে, তার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবির আহমেদ। দেশের জনগণ এবং আইনপ্রণেতাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালে ওয়ারেন্ট জারি হওয়া এই ব্যক্তিকে গত দুইদিন আগে হাউস অ্যারেস্ট করা উচিত ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার কোনো সুনির্দিষ্ট খবর পাওয়া যাচ্ছে না। এই অদ্ভুত অবস্থা শুধুই জনমনের মধ্যে সন্দেহ ও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অভিযোগ রয়েছে যে, কবির আহমেদের পালিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় সরাসরি সহযোগিতা করেছে সেনাপ্রধান ওয়াকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে লে. জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম (সিজিএস), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সেলিম আজাদ (ডিএমআই), মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর (ডি/জি/এফ/আই), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌফিক (ডি/জি/এফ/আই), এবং ঢাকা আর্মি সিকিউরিটি ইউনিটের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ার জাহিদ এই প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার কথা বলা হচ্ছে।

কবির আহমেদ শুধুই পালিয়ে যাওয়ার বিষয় নয়; তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, সে জুলাই-আগস্টের ছাত্র হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান আদেশদাতা। এর আগে এই চক্রের সহায়তায় দেশ ছাড়ে ক/সা/ই জিয়াউল আহসানের ডানহাত সার্জেন্ট তারিফ এবং ভারতীয় দালাল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুজিব পালিয়েছিল। এই চক্র এবং তাদের সহযোগীরা এখনো কার্যত দেশের অভ্যন্তরে সক্রিয় অবস্থায় থাকতে পারে এটি জনগণের মধ্যে গভীর আতঙ্ক ও অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। আমরা দৃঢ়ভাবে দাবি করছি, সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা, পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনী যেন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে। বিজিবি ইতিমধ্যেই সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে এবং সীমান্ত বন্ধ করেছে। জনগণও সচেতন থাকবে যে, দেশ-বিদেশ যেখানেই এই ধরনের দোষীকে পাওয়া যাবে, তাকে আইন অনুযায়ী গ্রেপ্তার করে আদালতের মুখোমুখি করতে হবে।

যদি সেনাবাহিনী প্রধান ওয়াকার কোনো খুনিকে গ্রেপ্তার করতে পারে না, তাহলে প্রশ্ন ওঠে এই বাহিনী কি সত্যিই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষক হতে পারে? জনগণের আস্থা ফেরত আনার জন্য এখনই প্রমাণ করতে হবে যে, আইন সকলের জন্য সমান। কোনো ব্যক্তির রাজনৈতিক বা সামাজিক প্রভাব আইন প্রয়োগে বাধা হতে পারবে না। এ প্রসঙ্গে, আমরা সেনাপ্রধানকে জানাচ্ছি যদি আগামীকাল পর্যন্তও তদন্তে সহযোগিতা না করা হয়, তাহলে জাতীয় আস্থা ও দায়িত্বশীলতার প্রেক্ষিতে ওয়াকারকে জাতির কাছে বেঈমান হিসেবে ঘোষণা করতে বাধ্য হব। আমাদের দাবি, গ্রেফতার ও তদন্তের ক্ষেত্রে আর কোনো বিলম্ব সহ্য করা হবে না। সর্বশেষে বলা যায়, জাতীয় নিরাপত্তা, নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং ন্যায়ের পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হলে আইন, বিচার এবং সেনাবাহিনী, নিরাপত্তা বাহিনীর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখতে হবে। কোনও অপরাধী আইনের বাইরে থেকে রেহাই পেতে পারবে না; আর জনগণ ও রাষ্ট্রের আস্থা সেনাবাহিনীর স্বচ্ছতা এবং দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থার মাধ্যমে ফিরে আসতে পারে।